২০২০ সালের পূর্বে রোহিঙ্গারা ফিরতে চায়

বিশেষ প্রতিবেদক :

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সম্মানজনক সমাধানে আমেরিকার জনগণ ও সরকার বাংলাদেশের সাথে কাজ করছে। রাখাইন থেকে নির্যাতনের মূখে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদার মানবতার স্বাক্ষর রেখেছেন তা বিশ্ব ব্যাপী মাইল ফলক হয়ে থাকবে।

এদিকে আগামী ২০২০ সালে মিয়ানমারের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব, ভোটাধিকার নিয়ে রাখাইনে নিজ নিজ ভিটে মাটিতে ফেরার আকুতি জানিয়েছে।  গতকাল ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে ক্যাম্প গুলোতে আয়োজিত আলোচনা সভায় রোহিঙ্গারা এ অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন।

কক্সবাজারের উখিয়া ও  টেকনাফের ক্যাম্প গুলোতে রোহিঙ্গাদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচআর)  কুতুপালং মেগা ক্যাম্পে তাদের অফিসে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে আলোচনা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের চেয়ারম্যান মাষ্টার মহিবুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় রোহিঙ্গা নেতারা উপরোক্ত বক্তব্য দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার ২০ জুন বিশ্ব শরণার্থী দিবস উপলক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং মেগা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সাথে র‌্যালিতে ও আলোচনা সভায় অংশ গ্রহণ করেন।অনুষ্ঠানে রোহিঙ্গা কমিউনিটি নেতারা তাদের মৌলিক দাবী আদায় পূর্বক মিয়ানমারে ফিরতে তাদের  আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।
কুতুপালং ক্যাম্পের ডি- ৫ ব্লকে ইউএনএইচসিআর এর কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার সহ ৩ সদস্যের প্রতিনিধি দল কয়েক শত  রোহিঙ্গার সাথে কথা বলেন। পরে প্রতিনিধি দল ডি -৪ ব্লকে পায়ে হেটে র‌্যালীতে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি উখিয়ার কুতুপালংয়ের বেশ কয়েকটি ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং এনজিওর কার্যক্রমও দেখেছেন। এ সময় কক্সবাজার শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার আবুল কালাম, ক্যাম্প ইনচার্জ রেজাউল করিম, পাবেল হায়দার, ওবাইদুল্লাহ সহ জাতিসংঘ ও এনজিও প্রতিনিধিরা উপস্হিত ছিলেন।

১৯৭৮ সালে প্রথম বাংলাদেশে মিয়ানমারের রোহিঙ্গারা অনুপ্রবেশ করলেও পরে কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে তারা নিজ দেশে ফেরত যান। এর পরে ১৯৯১ এর পর থেকে বড় আকারে তিন দফায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। এরপর ২০১২,২০১৫ সাল কয়েক দফায় বেশ কিছু রোহিঙ্গার আগমন ঘটে।

গত বছরের আগষ্টের পরে খুবই স্বল্প সময়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে সাড়ে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয়প্রার্থী হয়। এই দফায় রোহিঙ্গা শরণার্থীর ঢলকে ইউএনএইচসিআর গত এক দশকের মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীদের ঢল হিসেবে চিহিৃত করেছে। বিশ্ব শরনার্থী দিবস সম্পর্কে মিয়ানমারের নাগরিকদের কোন প্রকার ধারণা নেই।

জানতে চাইলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘মিয়ানমার প্রথমে বলেছিল, শূন্যরেখায় অবস্হান নেয়া রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেবে। কিন্তু ওই শূন্যরেখায় অস্হির পরিবেশ সৃষ্টি করে পরিস্হিতি বিমূখ করে রেখেছে মিয়ানমার।